মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৫

নারীর সাথে পুরুষের এবং পুরুষের সাথে নারীর সাদৃশ্যপূর্ণ বেশভূষা গ্রহণ

নারীর সাথে পুরুষের এবং পুরুষের সাথে নারীর সাদৃশ্যপূর্ণ বেশভূষা গ্রহণ



“যেসব পুরুষ নারীর সাথে এবং যেসব নারী পুরুষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বেশভূষা গ্রহণ করে তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।”
আরো উল্লেখ্য, পুরুষ কর্তৃক নারীর এবং নারী কর্তৃক পুরুষের কন্ঠস্বর অনুকরণও এর আওতাভুক্ত। নারী যখন পুরুষের মত আঁটসাঁট, পাতলা ও শরীরের আবরণযোগ্য অংশ অনাবৃত থাকে এমন পোশাক পরিধান করে, তখন সে পুরুষের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং অভিসম্পাতের যোগ্য হয়। তার এ আচরণ যদি তার স্বামী মেনে নেয় এবং তাকে এ থেকে বিরত না রাখে, তাহলে সেও অভিসম্পাতের যোগ্য হবে। কেননা স্ত্রীকে আল্লাহর আদেশের অনুগত রাখতে এবং তার নাফরমানী থেকে বিরত রাখতে সে আদিষ্ট।
মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর।” অর্থাৎ তাদেরকে সদাচারণ শিক্ষা দাও, আল্লাহর আনুগত্য করতে আদেশ দান কর এবং আল্লাহর নাফরমানী থেকে বিরত রাখ। যেমন তোমাদের নিজেদের ক্ষেত্রে এসব যেমন প্রয়োজনীয় তেমনি তাদের ক্ষেত্রেও। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর সবাই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল; তিনি তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ দায়িত্বশীল তার পরিবারের; সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। মহিলা দায়িত্বশীল তার স্বামীর গৃহের (তার সম্পদ ও সন্তানের); সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। ভৃত্যও একজন দায়িত্বশীল, সে জিজ্ঞাসিত হবে তার মুনিবের সম্পদ সম্পর্কে। (এককথায়) তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে।’ [সহীহ বুখারী : ৭১৩৮; তিরমিযী : ১৭০৫]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “পুরুষরা যখন স্ত্রীদের আজ্ঞাবহ হবে, তখন পুরুষরা ধ্বংস হবে।” (মুসলিম)
এ হাদীস থেকে অবগত হওয়া যায় যে, নারীর শাসনকর্ত্রী হওয়াও পুরুষের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বনের পর্যায়ভুক্ত এবং পুরুষ কর্তৃক নারীর আজ্ঞাবহ হওয়াও নারীর অনুকরণের পর্যায়ভুক্ত।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “দু’ শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামী হবে- যারা গরুর লেজ সদৃশ বেত দ্বারা মানুষকে প্রহার করে এবং যে সব নারী এত পাতলা পোশাক পরিধান করে যে তার ভেতর দিয়ে শরীরের অংশ দেখা যায় এবং অহংকারীর বেশে হেলে দুলে পথ চলে। এ নারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না, যা বহুদূর থেকে পাওয়া যায়।” (মুসলিম)
হযরত নাফে’ রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, একদিন হযরত ইবনে উমার ও আবদুল্লাহ ইবনে আমর হযরত যুবাইর (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এর কাছে ছিলেন। এমতাবস্থায় এক মহিলা ঘাড়ে ধনুক বহন করে মেষ পাল তাড়াতে তাড়াতে এগিয়ে এল। আবদুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তাকে জিজ্ঞেস করলেন;“তুমি পুরুষ না মহিলা? সে বলল; “মহিলা”। তখন তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের দিকে তাকালে তিনি বললেন; আল্লাহ তায়ালা স্বীয় নবীর পবিত্র মুখ দিয়ে পুরুষদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বনকারী মহিলাদেরকে এবং মহিলাদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদেরকে অভিসম্পাত করেছেন।
আর যে সমস্ত কাজের জন্য নারীদেরকে অভিসম্পাত করা হয় তা হচ্ছে বাইরে চলাফেরার সময় দেহের সৌন্দর্য ও গহনাপত্র প্রদর্শন, সুগন্ধি দ্রব্য গায়ে বা কাপড়ে মেখে চলা এবং খাট, আঁটসাঁট ও পাতলা পোশাক পরা, যা দ্বারা সতর ঢাকে না ও পর্দা হয় না। এ সবই তাবাররুজের অন্তর্গত। যার বিরুদ্ধে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোর সমালোচনা করেছেন। বর্তমান যমানায় অধিকাংশ মহিলা এসবে লিপ্ত রয়েছে বলেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; “আমি মি’রাজ রজনীতে জাহান্নাম দেখেছি এবং এর অধিকাংশ অধিবাসী মহিলা।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন