সকল বিজ্ঞানের উৎস কুরআনুল কারীম
বিশ্ব মানবতাকে ইহকালীন শান্তি আর পরোকালীন মুক্তির পথ প্রদর্শন করতে মহান আল্লাহ তা‘য়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীম এ উম্মতের উপর অবতীর্ণ করেন। ঈসায়ী ৬১০ থেকে ৬৩২ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে এ মহাগ্রন্থ আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ স. এর উপর অবতীর্ণ করা হয়। এ কথা আজো অমুসলিমরা স্বীকার করম্নক বা না করম্নক সারা দুনিয়ার সৃষ্টিকর্তা একমাত্র মহান আল্লাহ তা‘য়ালা। তিনি সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। আমাদের জানা অজানা সকল জ্ঞান বিজ্ঞানের সৃষ্টিকর্তা ও মুল উৎস বা আধার হলেন একমাত্র তিনি। কাজেই এ মহান সৃষ্টিকর্তার কথা সকল জ্ঞান বিজ্ঞানের উৎস হওয়ার দাবী করা মোটেই অস্বাভাবিক বা অমূলক কিছুনা। অতএব তাঁর মহান বাণী ও কথা ‘পবিত্র কুরআনুল কারীম’ যে সকল জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল উৎস এতে দ্বিধা করার আশাকরি কোন অবকাশ থাকে না।
হ্যাঁ, তবে প্রশ্ন থাকে, আসমানী গ্রন্থতো আরো ছিল বা আছে সেগুলোকে বাদ দিচ্ছেন কেন? এর স্পষ্ট জবাব হল, না আমরা সেগুলোকে অস্বীকার করছিনা। সেগুলোতেও আল্লাহ তা‘য়ালা জ্ঞান বিজ্ঞানের অনেক আলোচনা করেছিলেন। পবিত্র কুরআনই সেসব গ্রন্থাবলীকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু দূঃখের বিষয় হল, ঐসব আসমানী গ্রন্থগুলো আজ বলতে গেলে পুরোটাই বিকৃত। সেখানে জুড়ে দেয়া হয়েছে অসুস্থ মস্তিকের বিকৃত যতসব কল্পনা। ফলে সেখানকার বক্তব্যগুলো আজ আর ধর্তব্য নয়।
‘পবিত্র কুরআনুল কারীম সকল জ্ঞান বিজ্ঞানের উৎস’ হওয়া প্রসঙ্গে এতো গেল যুক্তির কথা। নি্নে প্রমাণ ভিত্তিক কিছু আলোচনা তুলে ধরা হল।
এখানে একটা কথা বলে নেয়া ভালো যে, উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে একথা বলা হচ্ছে না যে, পবিত্র কুরআন বিজ্ঞানের কোন মৌলিক উৎস গ্রন্থ। এটা বরং প্রেরণ করা হয়েছে গোটা মানব জাতির হেদায়েত তথা তাদেরকে ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির রাহা বাতলে দেয়ার জন্য। যেমনঃ আল্লাহ তা‘য়ালা ঘোষণা করেছেনঃ
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ
অর্থাৎ- মাহে রমাযানে কুরআন নাযিল করা হয়েছে, মানুষের জন্য হিদায়েত ও সত্য পথের যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশকারী এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী হিসেবে। (সূরা আল বাক্বারাঃ১৮৫)
তবে এখানে বিজ্ঞান সম্পর্কে যা কিছু আলোচনা করা হয়েছে তা এজন্য যে, মানুষ যেন এ সব বিষয়ে গবেষণা করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর বড়ত্বকে বুঝতে পারে, তার সৃষ্টি নিয়ে ভাবতে গিয়ে সত্যিকারার্থে এসবের সৃষ্টিকর্তাকে খুজে পায়। যেন যথার্থভাবে হেদায়েত গ্রহণ করে মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
তিনি ঘোষণা করেছেনঃ
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لِّأُوْلِي الألْبَابِ (190) الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىَ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ (191)
অর্থাৎ- নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাড়িয়ে, বসে এবং শয়নে আল্লাহর যিকির করে ও আসমান-জমিন সৃষ্টির বিষয়ে চিন্তা গবেষণা করে এবং বলে হে আমাদের প্রতিপালক এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমরই, তুমি আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর। (সূরা আল ইমরানঃ ৯০-৯১)
হ্যাঁ, তবে প্রশ্ন থাকে, আসমানী গ্রন্থতো আরো ছিল বা আছে সেগুলোকে বাদ দিচ্ছেন কেন? এর স্পষ্ট জবাব হল, না আমরা সেগুলোকে অস্বীকার করছিনা। সেগুলোতেও আল্লাহ তা‘য়ালা জ্ঞান বিজ্ঞানের অনেক আলোচনা করেছিলেন। পবিত্র কুরআনই সেসব গ্রন্থাবলীকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু দূঃখের বিষয় হল, ঐসব আসমানী গ্রন্থগুলো আজ বলতে গেলে পুরোটাই বিকৃত। সেখানে জুড়ে দেয়া হয়েছে অসুস্থ মস্তিকের বিকৃত যতসব কল্পনা। ফলে সেখানকার বক্তব্যগুলো আজ আর ধর্তব্য নয়।
‘পবিত্র কুরআনুল কারীম সকল জ্ঞান বিজ্ঞানের উৎস’ হওয়া প্রসঙ্গে এতো গেল যুক্তির কথা। নি্নে প্রমাণ ভিত্তিক কিছু আলোচনা তুলে ধরা হল।
এখানে একটা কথা বলে নেয়া ভালো যে, উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে একথা বলা হচ্ছে না যে, পবিত্র কুরআন বিজ্ঞানের কোন মৌলিক উৎস গ্রন্থ। এটা বরং প্রেরণ করা হয়েছে গোটা মানব জাতির হেদায়েত তথা তাদেরকে ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির রাহা বাতলে দেয়ার জন্য। যেমনঃ আল্লাহ তা‘য়ালা ঘোষণা করেছেনঃ
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ
অর্থাৎ- মাহে রমাযানে কুরআন নাযিল করা হয়েছে, মানুষের জন্য হিদায়েত ও সত্য পথের যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশকারী এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী হিসেবে। (সূরা আল বাক্বারাঃ১৮৫)
তবে এখানে বিজ্ঞান সম্পর্কে যা কিছু আলোচনা করা হয়েছে তা এজন্য যে, মানুষ যেন এ সব বিষয়ে গবেষণা করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর বড়ত্বকে বুঝতে পারে, তার সৃষ্টি নিয়ে ভাবতে গিয়ে সত্যিকারার্থে এসবের সৃষ্টিকর্তাকে খুজে পায়। যেন যথার্থভাবে হেদায়েত গ্রহণ করে মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
তিনি ঘোষণা করেছেনঃ
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لِّأُوْلِي الألْبَابِ (190) الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىَ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ (191)
অর্থাৎ- নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাড়িয়ে, বসে এবং শয়নে আল্লাহর যিকির করে ও আসমান-জমিন সৃষ্টির বিষয়ে চিন্তা গবেষণা করে এবং বলে হে আমাদের প্রতিপালক এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমরই, তুমি আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর। (সূরা আল ইমরানঃ ৯০-৯১)
কুরআনের পরিচয়ঃ
পবিত্র কুরআনের অসংখ্য বৈশিষ্টের মধ্যে অন্যতম হল সে নিজেই নিজের পরিচয় বর্ণনা করে থাকে। এক্ষেত্রে তার পরিচয়ের মধ্যে একটি পরিচয়কে সে তুলে ধরেছে এভাবেঃ
تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْحَكِيمِ (2)
অর্থাৎ- এগুলো বিজ্ঞানময় গ্রন্থের আয়াত। সূরা লোকমানঃ ০২
يس (1) وَالْقُرْآنِ الْحَكِيمِ (2)
অর্থাৎ- ইয়াছিন, বিজ্ঞানময় গ্রন্থের শপথ। (সূরা ইয়াছিনঃ ০১-০২)
এখন প্রশ্ন জাগে, এ সব আয়াতে কুরআনুল কারীমকে কেন ‘বিজ্ঞানময়’ বলা হল? তাহলে কি এটি বিজ্ঞান বিষয়ক নানা তত্ব-তথ্যে সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ? হ্যাঁ, সত্যিই এটি জ্ঞান বিজ্ঞানে পরিপূর্ণ এক বিষ্ময়কর গ্রন্থ। কুরআনের ৬৬৬৬ টি আয়াতের মধ্যে প্রায় ১০০০ টি আয়াতেই প্রচলিত বিজ্ঞান সংক্রান্ত বর্ণনা রয়েছে । তাই বলে এটি মানব রচিত কোন বিজ্ঞান গ্রন্থের মত কোন গ্রন্থ নয়। এটি মহান আল্লাহ তা‘য়ালার অবতীর্ণকৃত এক মু‘যেজ গ্রন্থ। কালের পরিবর্তনে বৈজ্ঞানিক তত্বে পরিবর্তন আসলেও কুরআনে পাকে বর্ণিত এসব আয়াতের বিন্দু-বিষর্গ এযাবৎ কালে পরিবর্তন হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবার নয়।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে কুরআনের বর্ণনাঃ
১• Creation initiated through a Big bang:
আধুনিক বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্ব সৃষ্টির যে মৌলিক তত্ত আবিস্কার করেছেন তার নাম Big bang theory বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব। ১৯২৭ সনে বেলজিয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী G.Lemaitre উক্ত তত্ত প্রকাশ করেন এবং ১৯৩০ সনে বৃটিশ বিজ্ঞানী Edington ব্যাপক পরীক্ষার মাধ্যমে তা নিশ্চিত করেন।
Big bang theory হচ্ছে এমন একটি ঘটনা যার আগে নভোমন্ডল, ভূমন্ডল, চন্দ্র, সূর্য, সৌরজগত, গ্যালাক্সি, নেবুলা ইত্যাদি কিছুই ছিলনা। অর্থাৎ বর্তমান মহাবিশ্বের পদার্থ, শক্তি এবং স্থান- কাল একটি বস্তুপিন্ডে কেন্দ্রিভূত ছিল। বস্তুপিন্ডটির নাম দেয়া হয়েছে Primeval atom । আজ থেকে ১৫০০ কোটি বছর আগে আদি বস্তুপিন্ডটির মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সকল জিনিস সৃষ্টির সূচনা হয়।
উনিশ শতকে আবিস্কৃত এ Big bang theory সম্পর্কে ১৫০০ বছর আগে মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীম তথ্য দিয়েছে এভাবেঃ
أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا
অর্থাৎ-অবিশ্বাসীরা কি লক্ষ করেনা যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল পরস্পর একটি বস্তুর ন্যায় সংযুক্ত ছিল অতপর তা আমি বিস্ফোরণের দ্বারা পৃথক করেছি। (সূরা আন্বিয়াঃ ৩০)
إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ
অর্থাৎ-এটা হবে এক মহা বিস্ফোরণ। অতপর তারা সবাই আমার সমীপে সমবেত হবে। (সূরা ইয়াসিনঃ ৫৩)
এ আয়াতে বলা হচ্ছে একটি মহাবিস্ফোরণ সংগঠিত হবে দ্বিতীয়বার সৃষ্টির সময়। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলছেনঃ
كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ
অর্থাৎ- প্রথমবার সৃষ্টির সময় আমি যেভাবে সৃষ্টি করেছিলাম পূনরায় একই পদ্ধতিতে সৃষ্টি করা হবে। (সূরা আম্বিয়াঃ ১০৪)
এথেকে বুঝা যায় যে, মহাবিশ্ব প্রথম সৃষ্টি হয়েছিলঃ صَيْحَةً যার এক অর্থ Big blast অর্থাৎ-মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে।
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِذَا قَضَى أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
অর্থাৎ- নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টিকর্তা তিনি আল্লাহ। তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করার জন্য শুধু বলেন ‘হও’ অমনি তা হয়ে যায়। (সূরা বাক্বারাঃ ১১৭)
২• মহাবিশ্বের সম্প্রসারণঃ
আধুনিক বিজ্ঞানের এক যগান্তকারী আবিস্কার হলঃ মহাজগৎ ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে। ১৯২৯ সালে Edwin Hubble আলোক বর্ণালীর (Spectrum) সাহায্যে গ্যালাক্সিগুলোর দূরত্ব পরিমাপ করতে গিয়ে পূর্বের চেয়ে দূরত্বে অনেক পার্থক্য লক্ষ করেন। তিনি আরো পর্যেবেক্ষণ করে দেখেন যে ছায়াপথ গ্যালাক্সি নিকটতম যে সব গ্যালাক্সি ইতিপূর্বে দূর্বীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়েছিল ওগুলো আর সে স্থানে নেই।
বিশাল মহাবিশ্ব অসংখ্য গ্যালাক্সি সমষ্টি। বিজ্ঞানের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৯ সালে ১২৫০০ (বারো হাজার পাঁচশত) কোটি গ্যালাক্সি আমাদের মহাবিশ্বজুড়ে রয়েছে। এখনো প্রতিদিন গ্যালাক্সি জন্ম হচ্ছে এবং তা সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানী Albert Einstein তার আলোড়ন সৃষ্টিকারী তত্ত্ব Cosmological constant (মহাজাগতিক ধ্রুবক) এ বলেছেন ‘একটি রহস্যময় স্বতাড়িত বৈশিষ্ট্যের কারণে মহাবিশ্ব ক্রমেই সম্প্রসারিত হয়ে চলছে।
সেই জাহেলী যুগের অবসানকারী কুরআন সে যুগে এ বিস্ময়কর তত্ত্বের জানান দিয়েছে। কুরআনে সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বলছেনঃ
وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
অর্থাৎ-প্রবল শক্তিবলে আমি আকাশ সমূহকে সৃষ্টি করেছি এবং আমি তা সম্প্রসারণ করে চলছি। (সূরা যারিয়াত-৪৭)
يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
অর্থাৎ-আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে যেমন ইচ্ছা বর্ধিত করেন এবং তিনি প্রত্যেক বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন। (সূরা ফাতির-১)
৩• Closed Big bang বা পৃথিবী ধ্বংস প্রসঙ্গঃ
আজকালের আধুনা বিজ্ঞানীরা একাথা স্বীকারতো করেছেনই বরং বলতেও শুরু করেছেনঃ এ পৃথিবী একদিন অবশ্যম্ভাবিভাবে ধংস হয়ে যাবে। এটাকে বলা হয়ঃ Closed Big bang । এ প্রসঙ্গে কুরআন স্পষ্টতোই ঘোষণা করেছেঃ
يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
অর্থাৎ- সেদিন আমি মহাবিশ্ব (মহাকাশ) গুটিয়ে নিব, যেমনি করে গুটিয়ে নেয়া হয় লিখিত বইপত্র। আর প্রথমবার সৃষ্টি করার সময় আমি যেভাবে Big bang আরম্ভ করেছিলাম অনুরূপভাবে তা আবার ফিরিয়ে নেয়া হবে। •••••••••••••••••••••••••সূরা আম্বিয়াঃ ১০৪
إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ (1) وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انْتَثَرَتْ
অর্থাৎ- যেদিন আকাশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং গ্রহ সমূহ ছড়িয়ে পড়বে। (সূরা ইনফিতারঃ ১-২)
كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا
অর্থাৎ- সেদিন পৃথিবী চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গুড়া হয়ে যাবে। (সূরা ফজরঃ ২১)
৪• Law of Gravitation বা মহাকর্ষ সূত্রঃ
মহাবিশ্বের প্রত্যেক বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে। এর নাম মহাকার্ষ শক্তি বা Gravitation energy । বৃটিশ বিজ্ঞানী নিউটন এটি আবিস্কার করেছেন বলে জগৎবাসী জানে। অথচ এর অনেক পূর্বে মহাকার্ষ শক্তি সম্পর্কে দুনিয়াবাসীকে চমৎকারভাবে জানিয়ে দিয়েছে। কুরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেনঃ
اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
অর্থাৎ- তিনি আল্লাহ যিনি স্তম্ভ ব্যতীত আকাশগুলোকে সুউচ্চ করেছেন যা তোমরা দেখতে পাচ্ছ। (সূরা রা‘য়াদঃ ২)
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
অর্থাৎ- তিনি (আল্লাহ)স্তম্ভ ব্যতীত আকাশসমূহকে সৃষ্টি করেছেন যা তোমরা দেখতে পাচ্ছ। সূরা লোকমান-১০)
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَنْ تَزُولَا
অর্থাৎ-নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে এমনভাবে ধারণ করে রেখেছেন, ফলে সেগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পতিত হয় না। (সূরা ফাতির-৪১)
এসব আয়াতে মাধ্যমে মহাকার্ষ শক্তির স্বাভাবিক ও সার্বিক বৈশিষ্ট স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে যা আজকের বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করছেন।
পবিত্র কুরআনের অসংখ্য বৈশিষ্টের মধ্যে অন্যতম হল সে নিজেই নিজের পরিচয় বর্ণনা করে থাকে। এক্ষেত্রে তার পরিচয়ের মধ্যে একটি পরিচয়কে সে তুলে ধরেছে এভাবেঃ
تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْحَكِيمِ (2)
অর্থাৎ- এগুলো বিজ্ঞানময় গ্রন্থের আয়াত। সূরা লোকমানঃ ০২
يس (1) وَالْقُرْآنِ الْحَكِيمِ (2)
অর্থাৎ- ইয়াছিন, বিজ্ঞানময় গ্রন্থের শপথ। (সূরা ইয়াছিনঃ ০১-০২)
এখন প্রশ্ন জাগে, এ সব আয়াতে কুরআনুল কারীমকে কেন ‘বিজ্ঞানময়’ বলা হল? তাহলে কি এটি বিজ্ঞান বিষয়ক নানা তত্ব-তথ্যে সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ? হ্যাঁ, সত্যিই এটি জ্ঞান বিজ্ঞানে পরিপূর্ণ এক বিষ্ময়কর গ্রন্থ। কুরআনের ৬৬৬৬ টি আয়াতের মধ্যে প্রায় ১০০০ টি আয়াতেই প্রচলিত বিজ্ঞান সংক্রান্ত বর্ণনা রয়েছে । তাই বলে এটি মানব রচিত কোন বিজ্ঞান গ্রন্থের মত কোন গ্রন্থ নয়। এটি মহান আল্লাহ তা‘য়ালার অবতীর্ণকৃত এক মু‘যেজ গ্রন্থ। কালের পরিবর্তনে বৈজ্ঞানিক তত্বে পরিবর্তন আসলেও কুরআনে পাকে বর্ণিত এসব আয়াতের বিন্দু-বিষর্গ এযাবৎ কালে পরিবর্তন হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবার নয়।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে কুরআনের বর্ণনাঃ
১• Creation initiated through a Big bang:
আধুনিক বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্ব সৃষ্টির যে মৌলিক তত্ত আবিস্কার করেছেন তার নাম Big bang theory বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব। ১৯২৭ সনে বেলজিয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী G.Lemaitre উক্ত তত্ত প্রকাশ করেন এবং ১৯৩০ সনে বৃটিশ বিজ্ঞানী Edington ব্যাপক পরীক্ষার মাধ্যমে তা নিশ্চিত করেন।
Big bang theory হচ্ছে এমন একটি ঘটনা যার আগে নভোমন্ডল, ভূমন্ডল, চন্দ্র, সূর্য, সৌরজগত, গ্যালাক্সি, নেবুলা ইত্যাদি কিছুই ছিলনা। অর্থাৎ বর্তমান মহাবিশ্বের পদার্থ, শক্তি এবং স্থান- কাল একটি বস্তুপিন্ডে কেন্দ্রিভূত ছিল। বস্তুপিন্ডটির নাম দেয়া হয়েছে Primeval atom । আজ থেকে ১৫০০ কোটি বছর আগে আদি বস্তুপিন্ডটির মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সকল জিনিস সৃষ্টির সূচনা হয়।
উনিশ শতকে আবিস্কৃত এ Big bang theory সম্পর্কে ১৫০০ বছর আগে মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীম তথ্য দিয়েছে এভাবেঃ
أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا
অর্থাৎ-অবিশ্বাসীরা কি লক্ষ করেনা যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল পরস্পর একটি বস্তুর ন্যায় সংযুক্ত ছিল অতপর তা আমি বিস্ফোরণের দ্বারা পৃথক করেছি। (সূরা আন্বিয়াঃ ৩০)
إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ
অর্থাৎ-এটা হবে এক মহা বিস্ফোরণ। অতপর তারা সবাই আমার সমীপে সমবেত হবে। (সূরা ইয়াসিনঃ ৫৩)
এ আয়াতে বলা হচ্ছে একটি মহাবিস্ফোরণ সংগঠিত হবে দ্বিতীয়বার সৃষ্টির সময়। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলছেনঃ
كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ
অর্থাৎ- প্রথমবার সৃষ্টির সময় আমি যেভাবে সৃষ্টি করেছিলাম পূনরায় একই পদ্ধতিতে সৃষ্টি করা হবে। (সূরা আম্বিয়াঃ ১০৪)
এথেকে বুঝা যায় যে, মহাবিশ্ব প্রথম সৃষ্টি হয়েছিলঃ صَيْحَةً যার এক অর্থ Big blast অর্থাৎ-মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে।
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِذَا قَضَى أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
অর্থাৎ- নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টিকর্তা তিনি আল্লাহ। তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করার জন্য শুধু বলেন ‘হও’ অমনি তা হয়ে যায়। (সূরা বাক্বারাঃ ১১৭)
২• মহাবিশ্বের সম্প্রসারণঃ
আধুনিক বিজ্ঞানের এক যগান্তকারী আবিস্কার হলঃ মহাজগৎ ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে। ১৯২৯ সালে Edwin Hubble আলোক বর্ণালীর (Spectrum) সাহায্যে গ্যালাক্সিগুলোর দূরত্ব পরিমাপ করতে গিয়ে পূর্বের চেয়ে দূরত্বে অনেক পার্থক্য লক্ষ করেন। তিনি আরো পর্যেবেক্ষণ করে দেখেন যে ছায়াপথ গ্যালাক্সি নিকটতম যে সব গ্যালাক্সি ইতিপূর্বে দূর্বীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়েছিল ওগুলো আর সে স্থানে নেই।
বিশাল মহাবিশ্ব অসংখ্য গ্যালাক্সি সমষ্টি। বিজ্ঞানের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৯ সালে ১২৫০০ (বারো হাজার পাঁচশত) কোটি গ্যালাক্সি আমাদের মহাবিশ্বজুড়ে রয়েছে। এখনো প্রতিদিন গ্যালাক্সি জন্ম হচ্ছে এবং তা সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানী Albert Einstein তার আলোড়ন সৃষ্টিকারী তত্ত্ব Cosmological constant (মহাজাগতিক ধ্রুবক) এ বলেছেন ‘একটি রহস্যময় স্বতাড়িত বৈশিষ্ট্যের কারণে মহাবিশ্ব ক্রমেই সম্প্রসারিত হয়ে চলছে।
সেই জাহেলী যুগের অবসানকারী কুরআন সে যুগে এ বিস্ময়কর তত্ত্বের জানান দিয়েছে। কুরআনে সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বলছেনঃ
وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
অর্থাৎ-প্রবল শক্তিবলে আমি আকাশ সমূহকে সৃষ্টি করেছি এবং আমি তা সম্প্রসারণ করে চলছি। (সূরা যারিয়াত-৪৭)
يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
অর্থাৎ-আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে যেমন ইচ্ছা বর্ধিত করেন এবং তিনি প্রত্যেক বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন। (সূরা ফাতির-১)
৩• Closed Big bang বা পৃথিবী ধ্বংস প্রসঙ্গঃ
আজকালের আধুনা বিজ্ঞানীরা একাথা স্বীকারতো করেছেনই বরং বলতেও শুরু করেছেনঃ এ পৃথিবী একদিন অবশ্যম্ভাবিভাবে ধংস হয়ে যাবে। এটাকে বলা হয়ঃ Closed Big bang । এ প্রসঙ্গে কুরআন স্পষ্টতোই ঘোষণা করেছেঃ
يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
অর্থাৎ- সেদিন আমি মহাবিশ্ব (মহাকাশ) গুটিয়ে নিব, যেমনি করে গুটিয়ে নেয়া হয় লিখিত বইপত্র। আর প্রথমবার সৃষ্টি করার সময় আমি যেভাবে Big bang আরম্ভ করেছিলাম অনুরূপভাবে তা আবার ফিরিয়ে নেয়া হবে। •••••••••••••••••••••••••সূরা আম্বিয়াঃ ১০৪
إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ (1) وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انْتَثَرَتْ
অর্থাৎ- যেদিন আকাশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং গ্রহ সমূহ ছড়িয়ে পড়বে। (সূরা ইনফিতারঃ ১-২)
كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا
অর্থাৎ- সেদিন পৃথিবী চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গুড়া হয়ে যাবে। (সূরা ফজরঃ ২১)
৪• Law of Gravitation বা মহাকর্ষ সূত্রঃ
মহাবিশ্বের প্রত্যেক বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে। এর নাম মহাকার্ষ শক্তি বা Gravitation energy । বৃটিশ বিজ্ঞানী নিউটন এটি আবিস্কার করেছেন বলে জগৎবাসী জানে। অথচ এর অনেক পূর্বে মহাকার্ষ শক্তি সম্পর্কে দুনিয়াবাসীকে চমৎকারভাবে জানিয়ে দিয়েছে। কুরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেনঃ
اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
অর্থাৎ- তিনি আল্লাহ যিনি স্তম্ভ ব্যতীত আকাশগুলোকে সুউচ্চ করেছেন যা তোমরা দেখতে পাচ্ছ। (সূরা রা‘য়াদঃ ২)
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
অর্থাৎ- তিনি (আল্লাহ)স্তম্ভ ব্যতীত আকাশসমূহকে সৃষ্টি করেছেন যা তোমরা দেখতে পাচ্ছ। সূরা লোকমান-১০)
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَنْ تَزُولَا
অর্থাৎ-নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে এমনভাবে ধারণ করে রেখেছেন, ফলে সেগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পতিত হয় না। (সূরা ফাতির-৪১)
এসব আয়াতে মাধ্যমে মহাকার্ষ শক্তির স্বাভাবিক ও সার্বিক বৈশিষ্ট স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে যা আজকের বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করছেন।
এ ছাড়াও সমগ্র সৃষ্টির বিভিন্ন বিষয়াবলী সংক্রান্ত অসংখ্য আলোচনা করা হয়েছে মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীমে। নিম্নে সংক্ষিপ্তভাবে কিছু ইঙ্গিত করা হল মাত্র।
৫• সূর্যের নিজস্ব আলো আর চন্দ্রে আলোর প্রতিফলন প্রসঙ্গেঃ
কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُورًا
অর্থাৎ- তিনি সূর্যকে তেজদীপ্ত আলোকবর্তিকা রূপে তৈরী করেছেন আর চাঁদকে করেছেন আলোকিত উপগ্রহ। (সূরা ইউনুছ-৫)
وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
আর তিনি চাঁদকে আলোর প্রতিফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আর সূর্যকে করেছেন আলোকবর্তিকা। (সূরা নূহ-১৬)
৬• সূর্য ও সকল গ্রহ-উপগ্রহের গতি প্রসঙ্গেঃ
কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
অর্থাৎ-প্রত্যেকেই (নক্ষত্র, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদী) নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করছে। (সূরা আম্বিয়া-৩৩)
الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ
অর্থাৎ- চাঁদ এবং সূর্য যথাযথ হিসেবের অনুসরণ করে চলছে। (সূরা আর রহমান-৫)
৭• আহিৃক গতি প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ
অর্থাৎ- তোমরা কি দেখনা যে মহান আল্লাহ রাতকে দিনের মাঝে এবং দিনকে রাতের মাঝে প্রবেশ করান। তিনি রাত এবং সূর্যকে সুনিয়ন্ত্রিত করে রেখেছেন। (সূরা লোকমান-২৯)
৮• বার্ষিক গতি প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ آيَتَيْنِ فَمَحَوْنَا آيَةَ اللَّيْلِ وَجَعَلْنَا آيَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِتَبْتَغُوا فَضْلًا مِنْ رَبِّكُمْ وَلِتَعْلَمُوا عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ وَكُلَّ شَيْءٍ فَصَّلْنَاهُ تَفْصِيلًا
অর্থাৎ-আমি রাত ও দিনকে দুটি নিদর্শন করেছি । অতপর রাতের নিদর্শনকে নিস্প্রভ করে দিয়েছি এবং দিনের নিদর্শনকে দেখার উপযোগী করেছি। যাতে তোমরা তোমাদের প্রভূর অনুগ্রহ করতে পার এবং স্থির করতে পার বছর সমূহের গণনা ও হিসাব। আমি সব কিছুই বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। (সূরা বানী ই্স্রাঈল-১২)
৯• মধ্যাকার্ষন প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
أَلَمْ نَجْعَلِ الْأَرْضَ كِفَاتًا (25) أَحْيَاءً وَأَمْوَاتًا
অর্থাৎ-আমি কি পৃথিবীকে আকৃষ্টকারী বানায় নি? জীবিত ও মৃত্যু (জড়) প্রত্যেক বস্তুকে ধারণ করার জন্য। সূরা মুরসালাতঃ ২৫-২৬)
পবিত্র কুরআনের বিজ্ঞান সংক্রান্ত অলৌকিক বর্ণনায় কেবল মুসলমানই নয়, বিস্মিত হয়েছে অসংখ্য অমুসলিম বিজ্ঞানীরাও। পরবর্তিতে ইসলাম গ্রহন করেছে এমন সংখা অগণিত। সমকালে এমন অমুসলিম বিজ্ঞানীদের একজন হলেন বিজ্ঞানী ডা• টি, ভি এন পারসাদ। তিনি কানাডায় ম্যানিটোবা ইউনিভার্সিটির অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি কুরআনে বর্ণিত বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়াবলী নিয়ে গবেষণা করেছেন। রিয়াদে কোন এক মেডিকেল সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ
(অনুবাদ) আমার মনে হয় যে, মুহাম্মদ অত্যন্ত সাদাসিধে ধরণের লোক ছিলেন। তিনি পড়তে পারতেন না, লিখতেও জানতেন না। অর্থাৎ তিনি ছিলেন পুরোপুরি ভাবে একজন নিরক্ষর লোক। আমরা এখানে যে যুগের কথা বলছি, তা ছিল চৌদ্দশত বছর আগের কথা। আপনাদের একজন নিরক্ষর লোক জ্ঞান-বিজ্ঞানের এমন সব বক্তব্য ও নিগুঢ় তথ্য দিয়ে গেছেন যা বৈজ্ঞানিক প্রকৃতির দিক থেকে অত্যন্ত বিস্ময়কর, একেবারেই সঠিক ও নির্ভূল। আমি ব্যক্তিগতভাবে বুঝতে পারছিনা কীভাবে এগুলো পরিকল্পনা বিহীন ভাবে দৈবাৎ ঘটে যেতে পারল? আর কিভাবেই তা সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের বা তথ্য জ্ঞনের সাথে সামঞ্জস্যশীল হতে পারল? তাঁর বক্তব্যের মাঝে সামান্যতম ভূল-ত্রটিও নেই। মুহাম্মদের মুখ থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই যে নির্ভূল বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে, তা যে আল্লাহর বাণী ড• মুরের ন্যায় তা মেনে নিতে আমার মনেও কোনরূপ জটিলতা নেই।
পরিশেষে বলা যায় উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ঈসায়ী ৬১০ থেকে ৬৩২ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে অবতির্ণকৃত এ মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীম কোন মানুষের রচিত গ্রন্থ নয়। এখানে বৈজ্ঞানিক নানান বিষয়ে যে যুগে আলোচনা করা হয়েছে তা একক কোন মানুষের পক্ষেতো নয়ই গোটা জাতির পক্ষেও সম্ভব নয়। কুরআনে বর্ণিত বৈজ্ঞানিক কোন একটি থিউরি আবিস্কার করতে গিয়ে কোন কোন বিজ্ঞানীকে যুগ যুগ ধরে গবেষণা করতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে একা নিরক্ষর মুহাম্মদ স• এর পক্ষে মাত্র ২৩ বছরের মধ্যে এত সব থিউরী বর্ণনা করা একেবারেই অসম্ভব।
কাজেই সার্বিক সিদ্ধান্ত এটাই যে, পবিত্র কুরআন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এক মহাসত্য গ্রন্থ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে একে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ করতে পারবে সেই হবে সফলকাম। অন্যথায় তার জীবনের ষোল আনাই মিথ্যা বা ব্যার্থ। আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী সামগ্রিক জীবনকে পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন, আমীন।
কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُورًا
অর্থাৎ- তিনি সূর্যকে তেজদীপ্ত আলোকবর্তিকা রূপে তৈরী করেছেন আর চাঁদকে করেছেন আলোকিত উপগ্রহ। (সূরা ইউনুছ-৫)
وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
আর তিনি চাঁদকে আলোর প্রতিফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আর সূর্যকে করেছেন আলোকবর্তিকা। (সূরা নূহ-১৬)
৬• সূর্য ও সকল গ্রহ-উপগ্রহের গতি প্রসঙ্গেঃ
কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
অর্থাৎ-প্রত্যেকেই (নক্ষত্র, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদী) নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করছে। (সূরা আম্বিয়া-৩৩)
الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ
অর্থাৎ- চাঁদ এবং সূর্য যথাযথ হিসেবের অনুসরণ করে চলছে। (সূরা আর রহমান-৫)
৭• আহিৃক গতি প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ
অর্থাৎ- তোমরা কি দেখনা যে মহান আল্লাহ রাতকে দিনের মাঝে এবং দিনকে রাতের মাঝে প্রবেশ করান। তিনি রাত এবং সূর্যকে সুনিয়ন্ত্রিত করে রেখেছেন। (সূরা লোকমান-২৯)
৮• বার্ষিক গতি প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ آيَتَيْنِ فَمَحَوْنَا آيَةَ اللَّيْلِ وَجَعَلْنَا آيَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِتَبْتَغُوا فَضْلًا مِنْ رَبِّكُمْ وَلِتَعْلَمُوا عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ وَكُلَّ شَيْءٍ فَصَّلْنَاهُ تَفْصِيلًا
অর্থাৎ-আমি রাত ও দিনকে দুটি নিদর্শন করেছি । অতপর রাতের নিদর্শনকে নিস্প্রভ করে দিয়েছি এবং দিনের নিদর্শনকে দেখার উপযোগী করেছি। যাতে তোমরা তোমাদের প্রভূর অনুগ্রহ করতে পার এবং স্থির করতে পার বছর সমূহের গণনা ও হিসাব। আমি সব কিছুই বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। (সূরা বানী ই্স্রাঈল-১২)
৯• মধ্যাকার্ষন প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
أَلَمْ نَجْعَلِ الْأَرْضَ كِفَاتًا (25) أَحْيَاءً وَأَمْوَاتًا
অর্থাৎ-আমি কি পৃথিবীকে আকৃষ্টকারী বানায় নি? জীবিত ও মৃত্যু (জড়) প্রত্যেক বস্তুকে ধারণ করার জন্য। সূরা মুরসালাতঃ ২৫-২৬)
পবিত্র কুরআনের বিজ্ঞান সংক্রান্ত অলৌকিক বর্ণনায় কেবল মুসলমানই নয়, বিস্মিত হয়েছে অসংখ্য অমুসলিম বিজ্ঞানীরাও। পরবর্তিতে ইসলাম গ্রহন করেছে এমন সংখা অগণিত। সমকালে এমন অমুসলিম বিজ্ঞানীদের একজন হলেন বিজ্ঞানী ডা• টি, ভি এন পারসাদ। তিনি কানাডায় ম্যানিটোবা ইউনিভার্সিটির অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি কুরআনে বর্ণিত বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়াবলী নিয়ে গবেষণা করেছেন। রিয়াদে কোন এক মেডিকেল সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ
(অনুবাদ) আমার মনে হয় যে, মুহাম্মদ অত্যন্ত সাদাসিধে ধরণের লোক ছিলেন। তিনি পড়তে পারতেন না, লিখতেও জানতেন না। অর্থাৎ তিনি ছিলেন পুরোপুরি ভাবে একজন নিরক্ষর লোক। আমরা এখানে যে যুগের কথা বলছি, তা ছিল চৌদ্দশত বছর আগের কথা। আপনাদের একজন নিরক্ষর লোক জ্ঞান-বিজ্ঞানের এমন সব বক্তব্য ও নিগুঢ় তথ্য দিয়ে গেছেন যা বৈজ্ঞানিক প্রকৃতির দিক থেকে অত্যন্ত বিস্ময়কর, একেবারেই সঠিক ও নির্ভূল। আমি ব্যক্তিগতভাবে বুঝতে পারছিনা কীভাবে এগুলো পরিকল্পনা বিহীন ভাবে দৈবাৎ ঘটে যেতে পারল? আর কিভাবেই তা সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের বা তথ্য জ্ঞনের সাথে সামঞ্জস্যশীল হতে পারল? তাঁর বক্তব্যের মাঝে সামান্যতম ভূল-ত্রটিও নেই। মুহাম্মদের মুখ থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই যে নির্ভূল বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে, তা যে আল্লাহর বাণী ড• মুরের ন্যায় তা মেনে নিতে আমার মনেও কোনরূপ জটিলতা নেই।
পরিশেষে বলা যায় উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ঈসায়ী ৬১০ থেকে ৬৩২ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে অবতির্ণকৃত এ মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীম কোন মানুষের রচিত গ্রন্থ নয়। এখানে বৈজ্ঞানিক নানান বিষয়ে যে যুগে আলোচনা করা হয়েছে তা একক কোন মানুষের পক্ষেতো নয়ই গোটা জাতির পক্ষেও সম্ভব নয়। কুরআনে বর্ণিত বৈজ্ঞানিক কোন একটি থিউরি আবিস্কার করতে গিয়ে কোন কোন বিজ্ঞানীকে যুগ যুগ ধরে গবেষণা করতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে একা নিরক্ষর মুহাম্মদ স• এর পক্ষে মাত্র ২৩ বছরের মধ্যে এত সব থিউরী বর্ণনা করা একেবারেই অসম্ভব।
কাজেই সার্বিক সিদ্ধান্ত এটাই যে, পবিত্র কুরআন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এক মহাসত্য গ্রন্থ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে একে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ করতে পারবে সেই হবে সফলকাম। অন্যথায় তার জীবনের ষোল আনাই মিথ্যা বা ব্যার্থ। আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী সামগ্রিক জীবনকে পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন, আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন