কাল্পনিক কথোপকথন
গলা ব্যাথার কারণে ইদানিং শুধু জাউ খেতে হয়। জাউ দুই একবেলার জন্যে খুব ভালো খাদ্য। কিন্তু প্রায় প্রতিবেলার জন্যে অখাদ্যের কাছাকাছি। গতকাল রাতে এই অখাদ্য একগাদা খেয়ে ফেলেছি। খাওয়া দাওয়ার পর শুয়ে শুয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ছন্দ" বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছি। কঠিন বই।
"এক সময়ে জ্যোতিদাদারা দূরদেশে ভ্রমণ করিতে গিয়াছিলেন, তেতালার ছাদের ঘরগুলি শূন্য ছিল। সেই সময় আমি সেই ছাদ ও ঘর অধিকার করিয়া নির্জন দিনগুলি যাপন করিতাম। এইরূপে যখন আপনমনে একা ছিলাম তখন, জানিনা কেমন করিয়া... " এই পর্যন্ত পড়ার পর আমার পেটের ভেতর ভুটভাট শব্দ শুরু হলো। বদহজমের প্রাথমিক লক্ষন। মেজাজটা গেল বিগড়ে।
মেজাজ ভালো করার জন্যে কিছু একটা করা দরকার। ভাবলাম কবিগুরুর সাথে কাল্পনিক কথোপকথন করা যেতে পারে। আমি বারান্দায় গিয়ে চেয়ারে বসলাম। দৃশ্যপট এরকম...
কবিগুরু বারান্দায় বসে একমনে আকাশ দেখছেন। পাশে আমি বসে আছি। তার মতো আমিও আকাশ দেখার চেষ্টা করছি। আমি তেমন ভালো দেখতে পাচ্ছি না। কারণ আমার সামনে দড়িতে স্যান্ডোপ্যান্ট শুকাতে দেয়া হয়েছে।
-কবিগুরু, আপনি এখানে আসলেন কিভাবে?
-স্বর্গে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দেখি তোমার ঘরে এসে পড়েছি। কাহিনী কি কিছুই বুঝলাম না!
-যাকগে! ভালোই হলো। ভালো আছেন?
-হু। তোমার সাথে আমার ব্যক্তিগত কিছু কথা আছে।
-কি কথা!
-তোমার ঘরের দেয়ালে টানানো পোস্টারটা কার?
-কাজী নজরুল ইসলামের! আপনি চেনেন না নাকি? কি সর্বনাশ?
-গর্ধবের মতো কথা বলছো। চিনবোনা ক্যানো? পোস্টারের উপর ধুলাবালির আস্তর পড়ে আছে। চেহারা চেনার উপায় আছে?
-সরি।
-আমার পোস্টার নেই ক্যানো?
-আপনার জোয়ান বয়সের পোস্টার পাইনি। বুড়ো বয়সের একটা পেয়েছিলাম। আলখাল্লা পরে আছেন। ইয়া লম্বা দাঁড়ি গোফ। দেখলেই বুকে ধাক্কার মতো লাগে।
-তুমি তো ফাজিলের চূড়ান্ত। যাই হোক... একটা বিষয় নিয়ে ভাবছি। বিরক্ত করো না।
-মৃত্যুর পরেও সাহিত্য নিয়ে আছেন?
-হুম। একটা গান রচনা করবো। র্যাপ গান।
-কি সর্বনাশ!
-তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পারবে বাছা?
-অবশ্যই। যেমন আপনি লিখবেন, সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে, ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা। তখন আমি চিৎকার করে বলবো...
হেই বেবি! তুমি ক্যানো আছো ঝুলে,
জামা কাপড় যাবে খুলে!
তাই সাবধানে ঝুলো,
আমাকেও গাছে তুলো!
-তুমি অতিরিক্ত বদমাশ। কি ন্যাস্টি কথাবার্তা!
-সরি।
-তবে তুমি ছেলেটা ভালো। তোমার দুই একটা লেখা পড়েছি। ফাউল লেখা। তোমাকে লেখা শিখাবো।
-বেতন কতো দিতে হবে?
-মাসে এক লাখ দিলেই হবে।
-মারিয়া ফেলো! আমারে মারিয়া ফেলো!
-আমার পড়া না শিখলে অবশ্যই মারবো!
-কবিগুরু, আপনে যান। আমি ঘুমাবো।
-আচ্ছা। আগামী মাসের এক তারিখ থেকে আসবো। বাই। সি ইউ।
-বাই।
আমি বারান্দা থেকে চলে আসলাম। পোস্টারের উপর আসলেই ধুলাবালির স্তর। কালো একটা কি যেন নজরুল ইসলামের গালে লেগে আছে। মোটা তিলের মত। মোটা তিলের কারণে তাকে গ্রামের ঘটক সাহেবের মতো দেখাচ্ছে। পোস্টার মুছে বিছানায় আসলাম। চোখে ঘুম নেই। বই পড়েই কাটিয়ে দিতে হবে। ভূতের গল্পের বই। আগামীতে ভূতের সাথে কথোপকথনের ইচ্ছা আছে।
"এক সময়ে জ্যোতিদাদারা দূরদেশে ভ্রমণ করিতে গিয়াছিলেন, তেতালার ছাদের ঘরগুলি শূন্য ছিল। সেই সময় আমি সেই ছাদ ও ঘর অধিকার করিয়া নির্জন দিনগুলি যাপন করিতাম। এইরূপে যখন আপনমনে একা ছিলাম তখন, জানিনা কেমন করিয়া... " এই পর্যন্ত পড়ার পর আমার পেটের ভেতর ভুটভাট শব্দ শুরু হলো। বদহজমের প্রাথমিক লক্ষন। মেজাজটা গেল বিগড়ে।
মেজাজ ভালো করার জন্যে কিছু একটা করা দরকার। ভাবলাম কবিগুরুর সাথে কাল্পনিক কথোপকথন করা যেতে পারে। আমি বারান্দায় গিয়ে চেয়ারে বসলাম। দৃশ্যপট এরকম...
কবিগুরু বারান্দায় বসে একমনে আকাশ দেখছেন। পাশে আমি বসে আছি। তার মতো আমিও আকাশ দেখার চেষ্টা করছি। আমি তেমন ভালো দেখতে পাচ্ছি না। কারণ আমার সামনে দড়িতে স্যান্ডোপ্যান্ট শুকাতে দেয়া হয়েছে।
-কবিগুরু, আপনি এখানে আসলেন কিভাবে?
-স্বর্গে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দেখি তোমার ঘরে এসে পড়েছি। কাহিনী কি কিছুই বুঝলাম না!
-যাকগে! ভালোই হলো। ভালো আছেন?
-হু। তোমার সাথে আমার ব্যক্তিগত কিছু কথা আছে।
-কি কথা!
-তোমার ঘরের দেয়ালে টানানো পোস্টারটা কার?
-কাজী নজরুল ইসলামের! আপনি চেনেন না নাকি? কি সর্বনাশ?
-গর্ধবের মতো কথা বলছো। চিনবোনা ক্যানো? পোস্টারের উপর ধুলাবালির আস্তর পড়ে আছে। চেহারা চেনার উপায় আছে?
-সরি।
-আমার পোস্টার নেই ক্যানো?
-আপনার জোয়ান বয়সের পোস্টার পাইনি। বুড়ো বয়সের একটা পেয়েছিলাম। আলখাল্লা পরে আছেন। ইয়া লম্বা দাঁড়ি গোফ। দেখলেই বুকে ধাক্কার মতো লাগে।
-তুমি তো ফাজিলের চূড়ান্ত। যাই হোক... একটা বিষয় নিয়ে ভাবছি। বিরক্ত করো না।
-মৃত্যুর পরেও সাহিত্য নিয়ে আছেন?
-হুম। একটা গান রচনা করবো। র্যাপ গান।
-কি সর্বনাশ!
-তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পারবে বাছা?
-অবশ্যই। যেমন আপনি লিখবেন, সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে, ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা। তখন আমি চিৎকার করে বলবো...
হেই বেবি! তুমি ক্যানো আছো ঝুলে,
জামা কাপড় যাবে খুলে!
তাই সাবধানে ঝুলো,
আমাকেও গাছে তুলো!
-তুমি অতিরিক্ত বদমাশ। কি ন্যাস্টি কথাবার্তা!
-সরি।
-তবে তুমি ছেলেটা ভালো। তোমার দুই একটা লেখা পড়েছি। ফাউল লেখা। তোমাকে লেখা শিখাবো।
-বেতন কতো দিতে হবে?
-মাসে এক লাখ দিলেই হবে।
-মারিয়া ফেলো! আমারে মারিয়া ফেলো!
-আমার পড়া না শিখলে অবশ্যই মারবো!
-কবিগুরু, আপনে যান। আমি ঘুমাবো।
-আচ্ছা। আগামী মাসের এক তারিখ থেকে আসবো। বাই। সি ইউ।
-বাই।
আমি বারান্দা থেকে চলে আসলাম। পোস্টারের উপর আসলেই ধুলাবালির স্তর। কালো একটা কি যেন নজরুল ইসলামের গালে লেগে আছে। মোটা তিলের মত। মোটা তিলের কারণে তাকে গ্রামের ঘটক সাহেবের মতো দেখাচ্ছে। পোস্টার মুছে বিছানায় আসলাম। চোখে ঘুম নেই। বই পড়েই কাটিয়ে দিতে হবে। ভূতের গল্পের বই। আগামীতে ভূতের সাথে কথোপকথনের ইচ্ছা আছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন