সৌর জগতের সৃষ্টি সম্পর্কে কোরআন
সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান অবশ্যই কোরআনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করবে। কেননা কোরআন সত্য এ বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এখানে একথাটি বিশেষবাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, কোরআন কোন বিজ্ঞানের কিতাব নয়, তাই এখানে সকল সৃষ্টি সেভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে যাতে সৃষ্টিকর্তার শক্তি ও ক্ষমতার বিষয়ে মানুষ সন্দিহান না হয়। সৌরজগতের সৃষ্টি সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে- আল্লাহর আদেশের পর সৌরজগতের সৃষ্টি শুরু হল। এই শুরুতে ছিল সবকিছু ধোঁয়ার মত। পরে তিনি আসমান সমূহকে নিয়মিত করলেন। একটার উপর একটা আসমানের সৃষ্টি হল। কিন্তু দৃশ্যমান কোন খুঁটি নেই। এগুলো একটা থেকে অপরটি পৃথক রয়েছে কেবলমাত্র শক্তির দ্বারা।
নিম্নতম আসমান তথা আমাদের গ্যালাক্সির গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদির আলাদা কোন অস্তিত্ব ছিল না অর্থাৎ পৃথিবী ও আকাশমন্ডল পরস্পর সংযুক্ত ছিল। আল্লাহ প্রতি আসমানকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিলেন। তখন সেগুলোতে গ্রহ নক্ষত্র উপগ্রহের সৃষ্টি হল। এভাবে নিম্নতম আসমানে পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহের সৃষ্টি হল। গ্রহ এবং উপগ্রহগুলো পৃথক করা হল এমন এক শক্তির সাহায্যে, যেন তারা একটার উপর আরেকটা আপতিত না হয়। অর্থাৎ এগুলোকে অধীনস্থ করা হয়েছে নির্দিষ্ট হিসেবের।
রাতে পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে উর্দ্ধাকাশে তাকালে গ্রহগুলো দৃশ্যমান হয় তারকা সদৃশ, মনে হয় যেন পৃথিবীকে সৌন্দর্য্যমন্ডিত করেছে তাকে বেষ্টন করে থাকা আকাশ যা অলঙ্কৃত ঐ উজ্জ্বল তারকাগুলি দ্বারা। আর এভাবেই সেগুলো সৃষ্টি করা হয়েছে। নিম্নতম আসমানে সূর্য্য একটি গ্রহ, যা জলন্ত প্রদীপ সদৃশ করে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সূর্য্যই এই আসমানের পাহারাদার বা রক্ষক। প্রতিটি জীবনের সৃষ্টি, পুষ্টি, বৃদ্ধি ও ক্ষয় সূর্য্যের দ্বারাই সাধিত হয়। পৃথিবী নামক গ্রহটির উপগ্রহ চাঁদ। এই চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই অর্থাৎ এটি আলোকময়। সূর্য্যের আলোতে এটি আলোকিত হয় এবং রাতে পৃথিবী পৃষ্ঠে আলো প্রদান করে। চাঁদ, সূর্য্য যেমন হিসেবের অধীন তেমনি হিসেবের অধীন নক্ষত্ররাজীও।
এ সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতসমূহ- ‘এতদভিন্ন তিনি (আল্লাহ) আসমানের প্রতি মনোযোগ দিলেন, তখন তা ছিল শুধু ধোঁয়া।’ (৪১:১১) ‘পরে তিনি সাত (অসংখ্য) আসমানকে নিয়মিত করলেন এবং প্রতি আসমানকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিলেন’ (আল্লাহ বলেন) এবং আমি নিম্নআকাশকে তাঁরকারাজী দ্বারা সজ্জ্বিত করলাম এবং তাকে দিলাম এক পাহারাদার।’(৪১:১২) ‘আকাশমন্ডল ও পৃথিবী পরস্পর সংযুক্ত ছিল; পরে আমি ওদের পৃথক করে দিয়েছি এবং’(২১:৩০) ‘নিশ্চয়ই আমি নিম্নতম আসমানকে গ্রহাদির অলঙ্কারে সজ্জ্বিত করেছি।’(৩৭:৬) কল্যাণময় সেই তিনিই আসমানে স্থাপন করেছেন তারকাপুঞ্জ এবং সেখানে স্থাপন করেছেন একটি প্রদীপ্ত সূর্য্য এবং একটি আলো প্রদানকারী চন্দ্র।’ (২৫:৬১) সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন-একটার উপর আরেকটা এবং তারমধ্যে চন্দ্রকে করেছেন আলোকময় এবং সূর্য্যকে বানিয়েছেন প্রদীপ।’ (৭১:১৫-১৬) সূর্য্য এবং চন্দ্র অধীনস্থ (রয়েছে) নির্দিষ্ট হিসেবের।(৫৫:৫) তিনিই আকাশসমূহ দৃশ্যমান খুঁটি ছাড়াই উচ্চে রেখেছেন এবং তিনি অধীন করেছেন সূর্য্য এবং চন্দ্রকে।(১৩:২) তিনিই ধারণ করে রেখেছেন আসমানকে যেন তা জমিনের উপর আপতিত না হয় তার অনুমতি ছাড়া।(২২:৬৫) তিনিই অধীনস্থ করেছেন রাত্রি এবং দিবসকে, সূর্য্য এবং চন্দ্রকে। নক্ষত্ররাজীও তার হুকুমের অধীন।(১৬:১২)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন