সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ভালবাসার মর্যাদার দাম কি??

ভালবাসার মর্যাদার দাম কি??
দিন আর রাতের চক্রের ভেতর যে সময় বয়ে যায়, ব্যাপারটা ভাল। নতুন সূর্য দেখে নৈরাশ্যবাদী মনও কিছুটা সজাগ হয়, পুরোনো অনেক কিছু দুঃস্বপ্ন ভেবে নিয়ে কি অবলীলায় পাশ কাটায়। প্রায়োরিটি লিস্ট পাল্টায়, কিছু নাম আবার উপরে উঠে আসে। ফ্ল্যাশব্যাকের মত দ্রুত অতীত বয় মাথার ভেতর..
রাত দেড়টায় ফোন করে গান শুনতে চাওয়ার বন্ধু তো আর খুব বেশী থাকেনা মানুষের, যে কিনা মধ্যরাতে অতীত ঘাঁটবে আর কোথাও একটা সূক্ষ্ম শুন্যতা টের পেয়ে ফোন হাতে তুলে নিবে। সত্যিটা হল, আমার জীবনে এমন মানুষ খুব কম যারা আমাকে মনে করে। নিঃস্পৃহ আর অদ্ভূত আমার অনুপস্থিতি যারা সত্যি সত্যি টের পায়। তাই আমি যখন আমার প্রিয় গান হাতড়ে খুঁজে না পেয়ে "কি গান গাইব, কি গান গাইব" করতে করতে, আর তার আশেপাশের চৌদ্দগুষ্টির খবর নিতে নিতে, হঠাৎ গাওয়া শুরু করি
"তুমি কান্নার রঙ, তুমি জোছনার ছায়া".. সে গানের অন্তরাতে গিয়ে দেখি ভেতরের অশ্রুসাগর জলে টলমল, তবু রাশ ধরি আবেগের আর ভাবতে থাকি "নাহ এই মুহূর্তে আমি কেবল এক শিল্পী। সুরের ব্যথাটুকু শুধু শোনাতে হবে ঠিকঠাক, নিজের ব্যথা একটুও না।" তখন ঠিক ঐ মুহূর্তেই হয় আমার পুনর্জন্ম। ভোল পাল্টায় মধ্যরাত,
হয় দিনের মত উজ্জ্বল! জীবন ভালবাসবার বড় আকুতি জাগে। মনে হয় আমিও তো ফ্যালনা না! এমন মানুষ আমি এখনো চোখ বুজলে দেখতে পাই, যারা আমার নীরবতা বোঝে, যারা বন্ধু আমার! তাই আমার ভেতর যতই অশান্ত হোক না কেন আমি তো তাদের ক্ষনিকের মুক্তি দিতে পারি গান শুনিয়ে। তাদের জন্যও তো শুরু করা যায় একটা
নতুন দিন.. একফালি রোদের জন্য, হৃদয় শুদ্ধ ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া মধ্য আষাঢ়ের বৃষ্টির জন্য, কোন নব্য কবির পিঠ চাপড়ে তাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য, যে বই পছন্দ করে তাকে প্রিয় লেখকের একটা বই কিনে দেওয়ার জন্য, কারো সারপ্রাইজ বার্থডে পার্টি প্ল্যান করার জন্য, হাসপাতালে ছোটাছুটি করে কাজ শেখার জন্য, ডিগ্রি আর স্টাবলিশড জীবনের প্ল্যানিং এখনো ঠিক বুঝে উঠিনি। আর কিচ্ছু না পারি একটা মুমূর্ষু মানুষ শূন্য চোখে যখন হাত চেপে ধরে, তখন তার ঐ হাতটা নিতান্ত অকারনেই আরো কিছুক্ষন ধরে থাকার জন্য..
আমাদের জীবন আমাদের নিজেদের কাছে অর্থ হারাতেই পারে, কিন্তু আরেকটা মানুষকে কিছু দেওয়ার জন্য তার প্রয়োজন ফুরায় না কখনো..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন